ঝরে পড়ে আকাশ থেকে রিমঝিম,
মাটির গন্ধে ভরে মন ও নিঃশ্বাস।
পথের কাঁটায় ভিজে গিয়েছে পায়ের ছাপ,
প্রকৃতির মায়ায় হারায় সব দুঃখের মাপ।
বৃষ্টি—প্রকৃতির এক অসীম রহস্য। যখন আকাশ ঘন নীল থেকে ধূসর হয়ে আসে, মেঘে মেঘে বাজে দুর্লভ সুরের গুঞ্জন, মনে হয় পৃথিবী নিজেই শ্বাস নিতে শুরু করেছে। শিশিরের কণার মতো বৃষ্টি মাটিতে পড়ে, ধীরে ধীরে সবকিছুকে ভিজিয়ে দেয়। প্রতিটি ফোঁটা যেন একটি গল্প, একটি স্মৃতি, যা শুধু আমাদের চোখে নয়, মনেও প্রতিফলিত হয়।
বৃষ্টি কেবল পানি নয়। এটি আনন্দ, ভালোবাসা, নস্টালজিয়া এবং একাকীতার সঙ্গী। গ্রামের ছোট্ট পথ, শহরের রাস্তাঘাট—বৃষ্টি সব জায়গাকে নতুন রঙে রাঙিয়ে দেয়। স্কুলের দিনগুলো মনে পড়ে যায়, যখন বন্ধুদের সঙ্গে ছাতা ভাগাভাগি করে বৃষ্টিতে দৌড়েছি, কিংবা বই পড়তে বসে জানলার পাশে বৃষ্টির ঝিরঝির শব্দে স্বপ্ন ভেসে এসেছে।
বৃষ্টির সাথে মানুষের সম্পর্ক গভীর। কেউ কখনো বৃষ্টিতে নেমে আসে আনন্দের ছন্দে, কেউবা বসে থাকে চুপচাপ, মনে চিন্তা করে, স্মৃতি তুলে আনে। বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা যেন আমাদের আবেগের আয়না।
চায়ের কাপ হাতে জানলার পাশে,
ভেজা বাতাসে খুঁজে পাই নিজের হাসি।
জলের ধারা বাজায় হৃদয়ে সুর,
বৃষ্টি শোনায় মনকে শান্তির পূর।
বৃষ্টি কেবল প্রকৃতির সৃষ্টিই নয়, মানুষের জীবনেও প্রভাব ফেলে। এটি মনকে প্রশান্ত করে, দুঃখ ভুলিয়ে দেয়, আনন্দকে দ্বিগুণ করে। অনেক শিল্পী, কবি, লেখক বৃষ্টিকে অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে ব্যবহার করেছেন। বৃষ্টিতে প্রেম প্রকাশ, একাকীতার অনুভূতি, এমনকি জীবনের বিভিন্ন অধ্যায়ের প্রতিফলন পাওয়া যায়।
প্রতিটি বৃষ্টি আমাদের জীবনের সঙ্গে এক নতুন গল্পের সংযোগ ঘটায়। গ্রামের রাস্তা ভিজে যায়, ছোট্ট শিশুরা আনন্দে দৌড়ায়। শহরের ব্যস্ত মানুষ জানলার পাশে বসে, বৃষ্টির ঝিরঝির শব্দে চুপচাপ থাকে। বৃষ্টিতে যে কোনো ক্ষুদ্র মুহূর্তকে বড় করে তোলা যায়—কোনো প্রেমের ইশারা, কোনো স্মৃতির ঝলক, বা কোনো গভীর চিন্তা।
বৃষ্টি কেবল জল নয়, এটি আবেগ, স্মৃতি, আনন্দ, একাকীতার প্রতীক। প্রকৃতির এই রহস্যময় দান আমাদের জীবনকে সম্পূর্ণ করে। তাই বৃষ্টিকে শুধু পানি হিসেবেই নয়, এক সাহিত্যমূলক অনুভূতি, এক নরম স্পর্শ, এক মধুর গল্প হিসেবে গ্রহণ করা উচিত।